বেত্রাবতী ডেস্ক।।যশোরে সাবেক সেনা সদস্য ও পালবাড়ী তেতুলতলা মোড়ে অবস্থিত মাহী ট্রেডার্সের মালিক কর্পোরাল আনোয়ার হোসেনকে চাকু মেরে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চাকুসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৬ সদস্য আটক হয়েছে। এরা ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে হত্যা মিশন সাজায়।
আটককৃতদের কাছ থেকে একটি চাকু ও ৪ টি মোবাইলফোন জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।
১০ এপ্রিল বিকেল থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত যশোর কাজীপাড়া, পালবাড়ি ও ঝিনাইদাহ জেলার কালীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে যশোর গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশের সদস্যরা তাদের আটক করেন।
আটককৃতরা হচ্ছে যশোর পালবাড়ি নতুন খয়ের তলা এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২১), পুলিশ লাইন্স টালিখোলা এলাকার মৃত বাবু হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (১৯), একই এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে আবির হোসেন (২০), যশোর মিশন পাড়া এলাকার মুন্না ইসলামের ছেলে রুস্তম আলী (২২), পুরাতনকসবা কাজীপাড়া এলাকার মৃত জুলফিকার আলীর জুয়েলের ছেলে রাফাত ইয়ামিন (২২) ও বেগম মিলের সামনে আবুল হোসেনের ছেলে সজীব হোসেন (২০)।
ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখাকে নির্দেশ প্রদান করলে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি রুপন কুমার সরকার, পিপিএম এর দিক-নির্দেশনায় দিয়ে মাঠে নামেন।
ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম এর নেতৃত্বে এসআই আমিরুল ইসলাম, এএসআই গৌরাঙ্গ, আমিরুলসহ একটি চৌকশ টিম ঘটনা স্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অপরাধী কেন শনাক্ত করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১০এপ্রিল বিকেল থেকে রাত ১২ টা পযন্ত যশোর শহরের কাজীপাড়া, পালবাড়ীসহ কালীগঞ্জের বারোবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত ভাড়াটে চাকুমারা পার্টির ৬ সদস্যকে আটক করে। ঘটনায় ব্যবহৃত চাকু এমএম কলেজের পুরাতন ছাত্রাবাস চত্বর থেকে উদ্ধার করেন।
যশোর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রুপণ কুমার সরকার জানিয়েছেন, ৮ এপ্রিল রাত ৯ টার দিকে সাবেক সেনা সদস্য ও যশোর পালবাড়ী তেঁতুলতলা মোড়ে অবস্থিত মাহী ট্রেডার্সের মালিক কর্পোরাল আনোয়ার হোসেনকে দোকানের মধ্যে বসা অবস্থায় তার পেটে কিশোর গ্যাং-এর সদস্যরা চাকু মেরে পালিয়ে যায়।
এ সময় আশপাশের লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দুই দিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর ১০ এপ্রিল যশোর কোতোয়ালী থানায় অজ্ঞাত নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি ‘স্পর্শকাতর’ হওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার মামলাটির তদন্তভার দেন যশোর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে। একপর্যায়ে যশোর গোয়েন্দা পুলিশ কিশোর গ্যাং-এর সদস্যদের শনাক্ত করে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যের বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির নির্দেশে ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে নগদ ২০ হাজার টাকা গ্রহণে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্পোরাল আনোয়ার হোসেনকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বসা অবস্থায় ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে।
মূল পরিকল্পনাকারী কামরুল ও শফিকুলকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি জানান। এদের মধ্যে ৫ জন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।