
বেত্রাবতী ডেস্ক।।মাশরাফি বিন মর্তুজা, বাংলা দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে তারকা। যিনি বিশ্বের পরাশক্তি দেশগুলোকে ধরাশয়ী করেছেন বাইশ গজে। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে গেলেই যেন হয়ে যান ভিন্ন এক মানুষ।
তার বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ মুচি, ঝাড়ুদার ও কৃষক। নড়াইলে গেলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে কখনই ভুলেন না মাশরাফি।
নড়াইলে গেলেই হয়ে যান শৈশবের সেই দুরন্ত কিশোর। ছুটে যান শৈশবের বন্ধুদের কাছে।
চার বছর আগের কথা, বিপিএলের এক ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক মাশরাফির দিকে তেড়ে আসেন চিটাগং ভাইকিংসের পেসার শুভাশীষ রায়। সরাসরি টিভিতে সম্প্রচার হওয়া ম্যাচের কারণে গোটা বাংলাদেশই দেখেছে পুরো ঘটনা। অভিযোগ উঠেছিল, সনাতন ধর্মালম্বী বলে শুভাশীষের ওপর মাশরাফি আক্রমণাত্মক হয়েছেন, গালি দিয়েছেন।
ম্যাচের পরদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডায় বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক বলছিলেন, ‘ভাই দেখেন, আমি নাকি শুভাশীষ রে হিন্দু বলে গালি দিছি। এরা জানেই না আমার বন্ধু হলো সব মুচি, মেথর, নাপিত। নড়াইলে আমার কত বন্ধুই হিন্দু।’
তিনি বাড়িতে এলে যাদের সঙ্গে আড্ডায় মাতেন, সময় কাটান তাদের মধ্যে রয়েছে বন্ধু সুমন, রবি, অসিম, মানষ, সাজু ও রাজু। এরা সবাই মাশরাফির খুব কাছের বন্ধু। সবারই ধর্ম এবং পেশা ভিন্ন ভিন্ন। মানুষের বানানো সমাজে যাদেরকে নিম্ন শ্রেণির লোক হিসাবে গণ্য করা হয়।
মাশরাফির বন্ধুদের মধ্যে একজন রবি। পেশায় মুচি। নড়াইল শহরের চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে নাম বললে, একনামে সকলেই তাকে চিনবে।
সম্প্রতি একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে রবি জুতা সেলাই করছেন। হুডি ও মাস্ক পরে পায়ের ওপর পা তুলে পাশে বসে গল্প করছেন মাশরাফি।
মাশরাফির আরেকজন বন্ধু সুমন। পেশায় ঝাড়ুদার। মাশরাফির পুরাতন বন্ধুদের মধ্যে একজন একসাথে ক্রিকেট খেলা থেকে শুরু করে সব সময় পাশে থাকতেন। মাশরাফি নড়াইলে আসলে বা ঢাকায় থাকলেও, সকলের সাথে যোগাযোগ রাখেন। সময়পেলেই চলে আসে নড়াইলে।
সুমন বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমরা একসাথে চলাফেরা, খেলা-ধুলা করে বড় হয়েছি। মাশরাফি এখন আমাদের মতো মানুষের সাথে না মিশলেও তো পারে। কিন্তু নড়াইলে আসার আগেই মাশরাফি আমাদের সাথে যোগাযোগ করে, তবেই আসবে।