বেত্রাবতী ডেস্ক।। আজ পয়লা জ্যৈষ্ঠ । বাংলা পঞ্জিকার হিসাবে শুরু হয়েছে ‘ মধুমাস’।তাপ প্রবাহের দাপট দেখিয়ে বিদায় নিল বৈশাখ । দেশীয় রসালো ফলের মন মাতানো সৌরভে শুরু হলো জৈষ্ঠ্য । জৈষ্ঠ্যর প্রথম দিন প্রতিটি জায়গায় হরেক রকম ফলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠছে মন প্রাণ । চারিদিকে গ্রীষ্মের তাপদাহে যেমন সবাই অতিষ্ঠ তেমনি ফলের আগমনে সবাই মহা খুশি । রসালো ফলের মৌতাতে উতলা এখন প্রকৃতি ।
চারদিক এখন পাকা ফলের সৌরভে মাতোয়ারা । কামরাঙা , লটকনসহ হরেক ফলের স্বাদ আর রঙের ছোঁয়ায় বাঙালির রসনা তৃপ্তির মৌসুম । বাহারি আর পুষ্টিকর সব ফলের প্রাচুর্য এই মৌসুমকে দিয়েছে মধুমাসের মহিমা । বাঙালির মধুমাস জ্যৈষ্ঠ আসার আগেই রস টসটস বর্ণিল ফলে ছেয়ে গেছে রঙের বাজারগুলো ।
গ্রামের হাটবাজারে এখন মিষ্টি ফলের সুবাস । যেন ঘরে ঘরে ফল বাহারি আর পুষ্টিকর সব ফলের প্রাচুর্য এই মৌসুমকে দিয়েছে মধুমাসের মহিমা । বাঙালির মধুমাস জ্যৈষ্ঠ আসার আগেই রস টসট্স বর্ণিল রঙের ফলে ছেয়ে গেছে বাজারগুলো ।
একে অন্যের গ্রামের হাটবাজারে এখন মিষ্টি ফলের সুবাস । সুবাসিত আবেশ । গাছে গাছে এখন পুরুষ্টু কাঁঠালের বর্ণাঢ্য বিভা । গাঢ় সবুজ আমের শরীরে সিঁদুরের ছোপ। পেকে ওঠা লিচুগাছ ঘিরে দিনে পাখি আর রাতে বাদুড়ের কোলাহল ।
পাকা জামের মধুর রসে মুখ রঙিন করার স্বপ্নের দোলা । জাম – জামরুল – লিচু , আনারস , করমচা , আতা , তরমুজ , ফুটি , বাঙ্গি , বেল , খেজুর , কাঁচা তাল , জাম্বুরা , কাউফল , গোলাপজাম , উৎসব ।
বাড়িতেও ফল উপহার হিসেবে পাঠায় ।ফলের মধ্যে আম , আনারস , জাম , কাঁঠাল , জামরুল , লিচু , করমচা , আতা , তরমুজ , ফুটি , বাঙ্গী , বেল , কাঁচা তাল , লটকনসহ হরেক রকমের ফল পাওয়া যায় । ব্যবসায়ীরা এসব ফল নিয়ে বাজারে বসে থাকে । ক্রেতারা ইচ্ছে মতো দরদাম করে রসালো এসব ফল নিয়ে বাড়ি যায় । অনেকে নিজের গাছের ফল দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করে থাকে ।
গরমের তাপ যত বাড়ে পাকা কাঁঠালের গন্ধে ভরে উঠে গ্রামের উঠুনগুলো । সবাই একসঙ্গে বসে ফল খাওয়া এখনো গ্রাম বাংলার মানুষের চিরায়ত অভ্যাস । এখনকার সময়ে শহরের প্রতিটি বাজার ও অলি – গলিতে ফল পাওয়া যায় । ভ্যানে করে দেশীয় নানা জাতের আম বিক্রি করতে দেখা যায় ।
প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রাকে ট্রাকে মধুমাসের ফল আসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে । দামও অনেকটাই সাধ্যের মধ্যে । লিচুর যেন পসরা সাজিয়ে বসে থাকে ক্ষুদ্র ফল ব্যবসায়ীরা । গ্রামীণ হাট বাজারেও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রসালো ফল নিয়ে বসে থাকে দোকানিরা ।
জৈষ্ঠ্য মাসে পুরো দেশটাই যেন ফলের গন্ধে মৌ মৌ করতে থাকে । ফলপট্টি ঘুরে দেখা যায় , বাজারে উঠেছে পাকা আম , আনারস , তরমুজ , বাঙ্গি , জামরুল , করমচা , সফেদা , লিচু ও কাঁঠাল । ফল বিক্রেতারা জানান , ফলের বাজারে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চাহিদা লিচুর । ফল রোগ প্রতিরোধক এবং রোগ নিরাময়কও বটে ।
এক কথায় বলা যায় , ফল মহান সৃষ্টিকর্তার নিয়ামক স্বরূপ ।শুধু মানুষই নয় পশুপাখিরও প্রিয় খাদ্য।তবে এক শ্রেণীর অসাধু ফল ব্যবসায়ী ফলে রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে বিক্রি করে । এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর । ফল কেনার আগে এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ হতে হবে । কর্তৃপক্ষকেও এর বিরুদ্ধে নিতে হবে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা ।
পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে সামাজিক সচেতনতা । এদিকে পরিপক্ব হওয়ার আগেই কৃত্রিমভাবে পাকিয়ে ফরমালিন যুক্ত কিছু কিছু ফল বাজারে আসছে ।
এসব অপরিপক্ব ফল কর্তন করে বাজারে বিক্রি করছেন অধিক মুনাফা লোভী কিছু খামারি । আগাম বাজারে আসা ফলের দাম অধিক পাওয়া গেলেও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্রেতারা ।
আবার কাঁঠাল কাঁচা অবস্থায় সংগ্রহ করে বাগানেই বিষাক্ত ইথিলিন দিয়ে পাকানো হয় । বাজারে আজকাল যেসব ফল পাওয়া যায় তার অধিকাংশ বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পাকানো হয় । এসব খেলে স্বাস্থ্যের খুব ক্ষতি হয় । চকচকে ফল যা দেখতে ভারি সুন্দর তা না কেনাই ভালো ।
তাই দেখে শুনে ফল কিনে খাওয়া উচিত । সবাই সচেতন হলে এ বিষমুক্তি সম্ভব ।।