
ধুমধাম করে বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে দেয়া হয়েছে। মহানগরীর খড়খড়ির শ্রী শ্রী গোপালদেব ঠাকুর মন্দির প্রাঙ্গনে থাকা গাছ দুটির গায়ে হলুদ, বাদ্য-বাজনা, নাচ-গানের মধ্যদিয়ে শেষ হয় বিয়ের আয়োজন।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) এই বিয়ে সম্পন্ন করে মন্দির কর্তৃপক্ষ। ১৭ বছর আগে গাছ দুটিকে পাশাপাশি লাগানো হয়েছিলো। বিয়েকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকেই ওই মন্দিরে বেজে ওঠে সানাইয়ের সুর, ঢাকাঢোলের বাজনা
হিন্দুশাস্ত্রমতে, পাশাপাশি বট-পাকুড় গাছ থাকলে তাদের বিয়ে দিতে হয়। এই রীতি মেনেই শনিবার ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হলো গাছ দুটির। বটকে বর, পাকুড়কে কনে ধরে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের আগে বটের নাম রাখা হয় ‘বিজয়’। আর পাকুড় হয় ‘বনলতা’।
বিয়ের জন্য বট-পাকুড়সহ গোটা মন্দির প্রাঙ্গনকেই সাজানো হয়। বিয়েতে নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন প্রায় দেড় হাজারের মত মানুষ। দুপুরে সবাই খেয়েছেন। সারাদিন বাদ্য-বাজনার তালে নাচে-গানে মেতে উঠেছিলেন সবাই। নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে পুরোহিত পুলক আচার্য বিকালে শুরু করেন বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা। গোধুলীলগ্নে সম্পন্ন হয় এই বিয়ে।
এই বিয়েতে বটের বাবা-মা হয়েছিলেন বিধান চন্দ্র সরকার ও আরতি রানী সরকার দম্পতি। বিশ্বজিৎ সরকার ও কনিকা রানী সরকার দম্পতি হন পাকুড়ের বাবা-মা।
আয়োজকরা বলছেন, বট ও পাকুড় হিন্দুশাস্ত্রে পূজ্য বৃক্ষ। সে কারণে দেয়া হচ্ছে বট-পাকুড়ের বিয়ে। প্রথমে নারায়ণ পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আচার-অনুষ্ঠান। দুপুরে অন্তত দেড় হাজার জন অতিথিকে আপ্যায়ন করা হয়। বট ও পাকুড়ের বিয়ে মানেই মঙ্গল। তাই মঙ্গল কামনায় ভক্তরা যোগ দিয়েছেন বিয়েতে। স্থানীয়রা চাঁদা তুলে যুগিয়েছেন খরচ। পবিত্র গীতাতেও বট-পাকুরের বিয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে বলে জানালেন আয়োজকরা।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব সরকার জানান, ‘হিন্দুশাস্ত্রে আছে বট-পাকুড় একসাথে থাকলে তাদের বিয়ে দিতে হয়। সে জন্যই এ আয়োজন। এ বিয়েতে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে দাওয়াত করা হয়েছিল।
বিয়ের অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পুলিশ।