খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আবাসিক হোটেলে মেয়ের সামনে মাকে ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে খুলনা থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার এসআই জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া আদালত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তার মেয়ের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।
খুলনা থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে তারা হোটেল সুন্দরবন পরিদর্শন এবং হোটেলের মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন।
এছাড়া ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে এসআই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
তিনি আরো জানান, প্রত্যক্ষদর্শী ওই নারীর মেয়েকে (১১) বৃহস্পতিবার সকালে মহানগর হাকিম আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।
এসআই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা তদন্তে খালিশপুর জোনের সহকারি কমিশনার হুমায়ুন কবীরকে প্রধান করে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
বৃহস্পতিবার এসআই জাহাঙ্গীরকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও সহকারী কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, তিনি ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করে দিয়েছেন। দুয়েকদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী ডা. অঞ্জন কুমার চক্রবর্তী জানান, সকালে ধর্ষণের শিকার নারীকে ওসিসিতে ভর্তির পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এরপর তাকে মানসিক কাউন্সিলিং দেয়া হয়। তার শরীর ও পোশাক থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহসহ ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।
খুলনা থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, আদালতের অনুমতি নিয়ে এসআই জাহাঙ্গীরকে খুমেক হাসপাতালে নেয়া হবে। সেখানে তার শরীরের বিভিন্ন আলামত ও ডিএনএ নেয়া হবে।
হোটেল সুন্দরবনের কর্মচারী গোলাম মোস্তফা জানান, এসআই জাহাঙ্গীর মাঝেমধ্যে এই হোটেলে আসতেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি তাকে সঙ্গে নিয়ে মা-মেয়ে যে কক্ষে ছিলেন ওই কক্ষের দরজায় গিয়ে নক করেন। তারা দরজা খুলে দেয়ার পর তাকে (হোটেল কর্মচারীকে) মারধর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। এরপর কক্ষের ভেতরে কী ঘটেছে তা তিনি দেখেননি। তবে ওই নারীর চিৎকারে হোটেলের লোকজন নিচতলার মেইন গেটে তালা লাগিয়ে দেয়।
হোটেলের আরেক কর্মচারী সাজ্জাদ হোসেন সজল জানান, তিনি রাতে বাসায় ছিলেন। রাত ২টার দিকে মোবাইলে ঘটনা শুনে হোটেলে আসেন। এসে দেখেন এসআই জাহাঙ্গীরকে হোটেলের রিসিপশনে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার এক নারী তার ১১ বছরের অসুস্থ মেয়ে ও ২৬ বছর বয়সী ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর জন্য মঙ্গলবার বিকালে খুলনায় আসেন। রাতে তারা নগরীর শহীদ হাদিস পার্কের সামনে হোটেল সুন্দরবনে ওঠেন। রাত আড়াইটায় এসআই জাহাঙ্গীর মা-মেয়ের কক্ষে গিয়ে মেয়ের সামনে মাকে ধর্ষণ করেন। এরপর হোটেলের কর্মচারীরা তাকে আটকে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আরিফুজ্জামান আরিফ, অফিস: বাগআচঁড়া,যশোর
Copyright © 2025 বেত্রাবতী নিউজ২৪. All rights reserved.