
আর্থিক কেলেঙ্কারির দ্বিতীয় দফায় প্রকাশিত প্যান্ডোরা পেপার্সে আট বাংলাদেশির নাম পাওয়া গেছে।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে ওয়াশিংটনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের (আইসিআইজে) ফাঁসকৃত গোপনীয় আর্থিক দলিলপত্রে ওই আট বাংলাদেশির নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
প্যান্ডোরা পেপার্সের বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় আর্থিক দলিলপত্রে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে ওই আট বাংলাদেশিদের প্রত্যেকে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মালিক। এই আট বাংলাদেশি হলেন নিহাদ কবির, ইসলাম মনজুরুল, সাইদুল হুদা চৌধুরী, অনিতা রাণী ভৌমিক, সাকিনা মিরালি, মোহাম্মদ ভাই, ওয়াল্টার প্রমোদ এরবং ড্যানিয়েল আরনেস্টো আয়ুবাট্টি।
এদের মধ্যে নিহাদ কবিরের ঠিকানা হিসেবে ইন্দিরা রোডের নাম রয়েছে। তিনি পরিচয় হিসেবে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত তার প্রতিষ্ঠানের নাম ক্যাপিটাল ফেয়ার হোল্ডিং লিমিটেড। যা ২০০৮ সালের ৮ আগস্ট নিবন্ধন করা হয়।
ইনসলাম মনজুরুলের প্রতিষ্ঠানের নাম ওরিয়েন্টাল এগ্রিকালচার কেমিকেল কম্পানি। তার ঠিকানা হিসেবে নাম রয়েছে গুলশানের। পাশাপাশি লন্ডনের একটি ঠিকানাও তিনি দিয়েছেন। সাইদুল, সাকিনা ও মোহাম্মদ ভাই প্রত্যেকেই ঠিকানা হিসেবে গুলশানের নাম দিয়েছেন। আর অনিতা রাণী দিয়েছেন চকবাজারের নাম।
সাইদুলের প্রতিষ্ঠানের নাম বেবেন ইন্টারন্যাশনাল, অনিতার প্রতিষ্ঠানের নাম এন্টারপ্রাইজ হোল্ডিংস লিমিটেড, সাকিনার প্রতিষ্ঠানের নাম মুন রেকার সার্ভিসেস করপোরেশন, মোহাম্মদ ভাইয়ের প্রতিষ্ঠানে নাম ১৯৩৬ হোল্ডিংস লিমিটেড, প্রমোদের প্রতিষ্ঠানের নাম স্লিন্ট লিঙ্ক এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড এবং ড্যানিয়েলের প্রতিষ্ঠানের নাম কুডেল লিমিটেড।
আইসিআইজের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, প্যান্ডোরা পেপার্সের গোপনীয় আর্থিক দলিলপত্র বিশ্লেষণ করে দ্বিতীয় দফায় ১৫ হাজারেরও বেশি অফশোর কোম্পানি, ফাউন্ডেশন, ট্রাস্ট এবং অন্যান্য সংস্থার সুবিধাভোগী মালিকদের তথ্য প্রকাশ করছে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট।
পানামার আইনি সংস্থা অ্যালেমান, কর্ডেরো, গ্যালিন্ডো অ্যান্ড লি (অ্যালকোগাল) এবং ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের সদর দপ্তরে অবস্থিত ফিডেলিটি করপোরেট সার্ভিসেসের কাছ থেকে এসব তথ্য পেয়েছে আইসিআইজে।
দ্বিতীয় দফার এই গোপনীয় নথিপত্র প্রকাশের মাধ্যমে আইসিআইজের অফশোর লিকস ডেটাবেসে এখন ৮ লাখের বেশি অফশোর কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। যা ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি তথ্য ফাঁসের ঘটনা থেকে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আইসিআইজে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক এই কনসোর্টিয়ামের কাছে ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের মানুষ এবং কোম্পানির গোপন অর্থের হদিশ মিলেছে।
প্যান্ডোরা পেপার্সে যে ৮ বাংলাদেশির নাম পাওয়া গেছে তাদের সবারই অন্যান্য দেশের নাগরিকত্বও আছে। এসব দেশের মধ্যে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া এবং আর্জেন্টিনা। তবে এই তালিকায় ঠাঁই পাওয়া বাংলাদেশিদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমনকি যে সাংবাদিকরা এই তথ্য ফাঁস করেছেন তারাও সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি।