
পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় টাইগ্রে প্রদেশের বিদ্রোহীরা রাজধানী আদ্দিস আবাবা দখলে অগ্রসর হতে শুরু করায় দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) দেশটির সরকার টাইগ্রে বিদ্রোহীদের অভিযান ঠেকাতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে।এর আগে অঞ্চলটির বিদ্রোহীরা জানিয়েছিল, তারা ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলের আরও কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। এখন রাজধানী আদ্দিস আবাবা অভিমুখে অগ্রসরের চিন্তা-ভাবনা করছে তারা।
আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলীয় দারিদ্র্য পীড়িত দেশ ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠী টাইগ্রে পিউপিলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সদস্যদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে দেশের নাগরিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের আহ্বান জানানোর দুদিন পর রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়াতে জরুরি অবস্থা জারির খবর প্রকাশ করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার আদ্দিস আবাবার কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের অস্ত্র নিবন্ধন এবং তাদের নিজ নিজ এলাকা রক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহ ণ করতে বলেছিল। গেল কয়েকদিনে টিপিএলএফ বেশ কয়েকটি শহর দখলের দাবি করার পর জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণাটি সামনে এলো।
টিপিএলএফ বলছে, বর্তমানে তারা রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে প্রায় ৩৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের এক শহরের দখল নিয়েছে। এখন তারা রাজধানী অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার কথা ভাবছে।
আবির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইথিওপিয়ায় সর্বশেষ ছয় মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। সেই সময় কারফিউ জারি এবং জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়। আটক করা হয় হাজার হাজার মানুষকে।
আদ্দিস আবাবা কর্তৃপক্ষ বলছে, শহরের বাসিন্দাদের নিজের অস্ত্র নিবন্ধন এবং তাদের বসবাসের এলাকায় সংঘবদ্ধ হওয়া দরকার। বাড়িতে-বাড়িতে তল্লাশি এবং সমস্যা সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
টাইগ্রে অঞ্চলে এক বছরের বেশি সময় যাবৎ সরকারি বাহিনীর সাথে টিপিএলএফ বিদ্রোহীদের সংঘাত চলছে।যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে উভয়পক্ষের প্রতি অস্ত্র বিরতির আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া মেলেনি। যে কারণে সেখানে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
টিপিএলএফ বলছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়াই তাদের লক্ষ্য।দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বলেছেন, বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি সব ধরনের অস্ত্র এবং শক্তি বৈধ উপায়ে ব্যবহার করে দেশের মানুষকে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী টিপিএলএফকে প্রতিরোধ, ধ্বংস এবং কবর দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। সূত্র: বিবিসি