বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক তাদের নাম পরিবর্তন করতে যাচ্ছে বলে গত কয়েকদিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো।
বিষয়টি নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাইট হিসেবে ফেসবুক-এর নাম বদলায়নি, বরং এটি এখন নতুন একটি সোশ্যাল টেকনোলজি কোম্পানির অংশে পরিণত হয়েছে। নতুন এই কোম্পানির নাম ‘মেটা’।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাতে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানান, বর্তমান সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকের নাম অপরিবর্তিত থাকছে। ‘
মেটা’ হবে ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ সাইটের মূল কোম্পানি, যাকে কেন্দ্র করে আরও বেশ কিছু নতুন প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠবে। সব মিলিয়ে একে বলা হচ্ছে ‘মেটাভার্স’।
২০০৪ সালে মার্ক জাকারবার্গ ‘ফেসবুক ইনকরপোরেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে ছবি ও ভিডিও শেয়ার করার সাইট ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয়।
২০১৪ সালে কিনে নেয় হোয়াটসঅ্যাপ। সবগুলোই ‘ফেসবুক ইনকরপোরেশন’ এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছিল, যা এখন থেকে ‘মেটা ইনকরপোরেশন’ হিসেবে কাজ করবে।
শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ এবং কর্পোরেট পরিচয় থেকে বের হয়ে আসার লক্ষ্যে নিজেদের নাম পরিবর্তন করেছে ফেসবুক ইনকরপোরেশন।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যবহারকারীদের তথ্যের নিরাপত্তায় দুর্বলতা থাকা সহ নানা কারণে সমালোচনায় পড়ে ফেসবুক। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কয়েকজন কর্মীর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নানা তথ্য–উপাত্ত ফাঁস হয়। সেই সমালোচনা পেছনে ফেলে নতুন করে ব্র্যান্ডিংয়ের পেছনে এই নাম পরিবর্তন একটি বড় কারণ।
ইতোমধ্যে কোম্পানিটি ঘোষণা করেছে, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে (এআর) বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে তারা।
প্রায় ৩ বিলিয়ন ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন ডিভাইস এবং অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া মেটাভার্স তৈরিতে সহায়তার জন্য কোম্পানিটি আগামী ৫ বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ১০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নিজের অফিসিয়াল পেজ থেকে ‘ফাউন্ডার্স লেটার ২০২১’ শিরোনামে ‘মেটাভার্স’ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন মার্ক জাকারবার্গ।
মার্ক জাকারবার্গ বলেন, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার পরিধি কিছু নির্দিষ্ট ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। যখন ফেসবুক শুরু হয় তখন টেক্সট-নির্ভর ব্যবহার ছিল।
ক্যামেরা ফোন আসার পর ব্যবহারের ধরন বদলে গেল। এখন ভিডিও’র মাধ্যমে আরও সহজে অভিজ্ঞতা বিনিময় করা যায়। আগামীতে এটি আরও বদলে যাবে, যেখানে শুধু দেখা বা শোনা নয়, অন্যের অস্তিত্ব অনুভবও করা যাবে।
হলোগ্রামের মত হয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যাওয়া যাবে ঘরে বসেই। এটিই সোশ্যাল টেকনোলজির স্বপ্ন।