বাংলাদেশ : ১৮১/৭ (২০.০ ওভারে)
পাপুয়া নিউগিনি : ৯৭/১০ (১৯.৩ ওভারে)
ফল : বাংলাদেশ ৮৪ রানে জয়ী ।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সাকিব আল হাসান।
সুপার টুয়েলভ-এর সমীকরণ মেলাতে আগে চাই পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জয়, সঙ্গে ব্যবধানও। পরের ম্যাচে স্কটল্যান্ড-ওমানের ম্যাচের ফল-এর আগে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে এই পরীক্ষাটাই ছিল বাংলাদেশ দলের।
সে পরীক্ষাটা ভালই দিয়েছে বাংলাদেশ দল। এর আগে টি-২০ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ স্কোর (১৮০/২) এবং সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয় (৫৪ রান) দুটোই ছিল ওমানের বিপক্ষে ধর্মশালায়।
২০১৬ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে নিজেদের সেই সেরা রেকর্ড ছাপিয়ে নতুন রেকর্ড মাস্কটে বৃহস্পতিবার করেছে বাংলাদেশ।
টি-২০ বিশ্বকাপে এদিন নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোরের (১৮১/৭) রেকর্ডকে সর্বোচ্চ ব্যবধানে (৮৪ রান) জয় উদযাপনে সুপার টুয়েলভের পথে এক পা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ দল। ‘বি’ গ্রুপে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটে (+১.৭৩) সবার উপরে উঠে গেছে বাংলাদেশ।
স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে অল রাউন্ড পারফরমেন্সে নিজেকে চেনানো সাকিব (৪২ ও ৩/২৮) এই ম্যাচেও ম্যাচ উইনার (৪৬ রানও ৪/৯)।
গত ম্যাচে ৪ নম্বরে ব্যাট করে ১৪৪.৮২ স্ট্রাইক রেটে করেছেন সাকিব ২৯ বলে ৪২। এই ম্যাচে তিন নম্বরে ফিরে সাকিব হাফ সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন। শুরু থেকে ব্যাটিংয়ে ছিলেন অ্যাগ্রেসিভ।
তবে ৪ রানের জন্য টি-২০ ক্যারিয়ারের দশম এবং টি-২০ বিশ্বকাপে ৫ম ফিফটি মিস করেছেন। তিনটি ছক্কার ২টি মেরেছেন তিনি আসাদ ভালাকে। সেই আসাদ ভালার বলে লং অনে অসাধারণ ডাইভিং ক্যাচে থেমেছেন সাকিব (৩৬ বলে ৩ ছক্কায় ৪৬)। দারুন এক স্পেলে (৪-০-৯-৪) পাপুয়া নিউগিনিকে বড় জয়ে বাধ্য করেছেন সাকিব।
নিজের শেষ ওভারে নামিবিয়ার হিরি হিরিকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করে টি-২০ বিশ্বকাপে সর্বাধিক উইকেটে শিকারী পাকিস্তান লিজেন্ডারি শহীদ আফ্রিদিকে (৩৪ ম্যাচে ৩৯ উইকেট) ছুঁয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান (২৮ ম্যাচে ৩৯ উইকেট) !
স্কটল্যান্ড-ওমানের পরের ম্যাচটির কথা মাথায় রেখে তাই টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। পাপুয়া নিউগিনিকে রান পাহাড়ে চাপা দেয়াটাই ছিল মাহমুদউল্লাহদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্যটা পূরণ করেছে বাংলাদেশ।
টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ডটা ছিল এর আগে ১২৮০/২। ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে ধর্মশালায় সেই স্কোর টপকে বৃহস্পতিবার মাস্কটে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বাংলাদেশ করেছে ১৮১/৯।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে আগের দুই ম্যাচে ২৫ এবং ২৯ এ আটকে গেছে বলে গ্রুপ রাউন্ডের শেষ ম্যাচে এখানেই নজর দিতে হয়েছে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-এর স্কোরটা ৪৫/১, ছিল প্রত্যাশিত।
স্লগের ৩০ বলে একটু বেশিই আক্রমনাত্মক ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। ৩ উইকেট হারিয়ে যোগ করেছে শেষ ৩০ বলে ৬৮ রান!
গত ম্যাচে ৪ নম্বরে ব্যাট করে ১৪৪.৮২ স্ট্রাইক রেটে করেছেন সাকিব ২৯ বলে ৪২। এই ম্যাচে তিন নম্বরে ফিরে সাকিব হাফ সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন।
শুরু থেকে ব্যাটিংয়ে ছিলেন অ্যাগ্রেসিভ। তবে ৪ রানের জন্য টি-২০ ক্যারিয়ারের দশম এবং টি-২০ বিশ্বকাপে ৫ম ফিফটি মিস করেছেন।
তিনটি ছক্কার ২টি মেরেছেন তিনি আসাদ ভালাকে। সেই আসাদ ভালার বলে লং অনে অসাধারণ ডাইভিং ক্যাচে থেমেছেন সাকিব (৩৬ বলে ৩ ছক্কায় ৪৬)।
আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান নাইম এই ম্যাচে খেলেছেন মাত্র ২টি বল। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ডিপ স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি (০)। ব্যাটে ছন্দ খুঁজে পাওয়া লিটন থেমেছেন ২৯-এ। আসাদ ভালাকে সুইপ করতে যেয়ে মিড উইকেটে অসাধারণ ক্যাচে থেমেছেন লিটন (২৩ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় ২৯)।
সাকিবের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫০ রানে রেখেছেন অবদান লিটন। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এদিন ব্যাটে তুলেছেন ঝড়। টি-২০ ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ ফিফটি উদযাপন করেছেন তিনি মাত্র ২৭ বলে।
রাভুর ফুলটসে ডিপ স্কোয়ার লেগে যে শটটি নিয়েছিলেন, তা অসাধারণ ক্যাচে পরিণত হয়েও ওই ডেলিভারিকে নো চেক করতে হয়েছে। বীমার বলে একবার গণ্য হয়ে টিভি আম্পায়ার নট আউট কল করেছেন, জায়ান্ট স্ক্রীনে নট আউট ভেসে ওঠার পরক্ষনেই আউট ঘোষিত হয়েছে (২৮ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৫০)।
ডেথ ওভারে মাহমুদউল্লাহ ঝড় দেখতে পারেনি বাংলাদেশ সমর্থকরা। তার ফিরে যাওয়ায় দায়িত্বটা পালন করেছেন আফিফ (১৪ বলে ২১)। শেষ ওভারে সপারকে পাড়া মহল্লা মানে নামিয়ে এনে ২ ছক্কা, ১ চার-এ ৬ বলে ২০ রান যোগ করেছেন। যার মধ্যে নো বল থেকে শেষ ডেলিভারিতে প্রাপ্ত ফ্রি হিটকে পরিনত করেছেন বাউন্ডারিতে। রাভু (২/২৬), মোরেরা (২/৪০), আসাদ ভালা (২/২৬) ২টি করে উইকেট পেয়েছেন।
চলমান আসরে এটাই সর্বোচ্চ স্কোর। ২৪ ঘন্টা আগে আবুধাবিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলংকার ১৭১/৭ কে টপকে বাংলাদেশের স্কোর ১৮১/৭। স্কোরটা আরো বড় হতে পারতো। তবে পাপুয়া নিউগিনি ফিল্ডারদেরঅবিশ্বাস্য সব ক্যাচ, আর প্রানপন ফিল্ডিংয়ে তা পারেনি বাংলাদেশ।
পাপুয়া নিউগিনিকে ১৮২ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বড় ব্যবধানে জয়ে এদিন অবদান রেখেছেন সাইফউদ্দিন (৪-০-২১-২), তাসকিন (৩.৩-১-১২-২) এবং সাকিব (৪-০-৯-৪)।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে এই ত্রয়ীর আঘাতে ব্যাকফুটে নেমেছে পাপুয়া নিউগিনি (১৭/৪)। সেখান থেকে আর ফিরতে পারেনি।
নাইম শেখ এর দুটি দর্শনীয় ক্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ১০০-এর নিচে আটকে রাখা গেছে। ৯৭ রানে অল আউট করেছে বাংলাদেশ। যে ইনিংসে ঢাল-তলোয়ারহীন ব্যাটার দরিগা করেছেন ৩৪ বলে ৪৬*।
টি-২০ বিশ্বকাপ ইতিহাসে টানা দুই জয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ সাকিব। এমন রেকর্ডটাও বিরল।