আফগানিস্তান বিষয়ক শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক জালমে খলিলজাদ পদত্যাগ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন গত শুক্রবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েয়েছেন খলিলজাদ।
সোমবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন, এখন থেকে আফগানিস্তানে মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করবেন টম ওয়েস্ট, যিনি পূর্বে খলিলজাদের সহকারী ছিলেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে দোহায় তালেবানগোষ্ঠীর সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল মার্কিন সরকারের, সেই অনুযায়ীই আফগানিস্তান বিষয়ক নীতি নির্ধারণ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা, মার্কিন নাগরিক ও মার্কিন বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করা আফগানদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রায় দু’মাস পর চলতি অক্টোবরে দোহায় তালেবান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন সরকারের প্রতিনিধিরা।
সেই বৈঠকের দু-সপ্তাহের মধ্যেই পদত্যাগ করলেন খলিলজাদ। এ সম্পর্ক মন্তব্য চেয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, তবে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
৭০ বছর বয়সী জালমে খলিলজাদের জন্ম আফগানিস্তানে, শৈশব-কৈশর কেটেছে কাবুলে। অভিজ্ঞ ও ঝানু এই কূটনীতিক সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান বিষয়ক শীর্ষ কূটনীতিকের পদে আসীন হন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দোহায় তালেবান বাহিনীর সঙ্গে মার্কিন সরকারের যে চুক্তি হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন খলিলজাদ।
চলতি বছর এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার এই ঘোষণা দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের সবগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবান বাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন যুদ্ধ ছিল আফগানিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ; কিন্তু দুই দশকের এই যুদ্ধের সমাপ্তি যখন ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র, তার অতি অল্প সময়ের ব্যবাধানে তালেবান বাহিনীর এই সাফল্যকে যুক্তরাষ্ট্রের এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখেছে বিশ্ববাসী এবং তার জন্য অনেকাংশে দায়ী জালমে খলিলজাদ।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি তালেবান বাহিনীর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন, ধারাবাহিকভাবে আফগানিস্তানের মার্কিন সমর্থিত সরকারকে অবহেলা করে গেছেন এবং তিনি মনে করতেন তিনি যা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন- তাই সঠিক। ভিন্নমত শোনা বা তার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার আগ্রহ খুব কম ছিল তার মধ্যে।’