আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা! দীর্ঘ পাঁচ বছরের বিরতি শেষে পর্দা উঠতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সপ্তম আসরের। ১৬ দেশের অংশগ্রহণে ওমান ও আরব আমিরাতে বসতে চলেছে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরটি।
রোববার উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি।
একইদিন পরের ম্যাচটিতে লড়বে বাংলাদেশ ও স্কটল্যান্ড। মাঠের লড়াই শুরুর আগে জেনে নেয়া যাক বিশ্বকাপের এবারের আসরের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য:
খেলা কবে থেকে শুরু হবে?
প্রথম দিনে দুই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপের এবারের আসর। মাসব্যাপী এ টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে আগামী ১৪ নভেম্বর।
বিশ্বকাপের আয়োজক কারা
বিশ্বকাপের এবারের আসরের আয়োজক ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। খেলা অনুষ্ঠিত হবে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানে। ভারতের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ও দেশটিতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার সম্ভাবনা প্রবল থাকায় গত জুনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খেলার ধরন
টুর্নামেন্টটি দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রথম পর্বে আটটি দল খেলবে।
গ্রুপ এ: শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং নামিবিয়া
গ্রুপ বি: বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি এবং ওমান
প্রতিটি দল তার গ্রুপের প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে একবার করে খেলবে। আল আমেরাত, শারজাহ এবং দুবাইয়ে ১২টি ম্যাচ খেলার পর দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল সুপার টুয়েলভে খেলবে। সেখানে তারা টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ের শীর্ষ আটটি দলের সঙ্গে যোগ দেবে।
সুপার টুয়েলভে দলগুলো পুনরায় দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলবে।
গ্রুপ ১: ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এ১ এবং বি২
গ্রুপ ২: ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, বি১ এবং বি২
পুনরায় প্রতিটি দল তাদের গ্রুপের প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে একবার করে খেলবে। এই পর্বের ৩০টি ম্যাচ শারজাহ, আবুধাবি এবং দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি গ্রুপের দুটি শীর্ষ দল সেমিফাইনালে খেলবে।
খেলার পয়েন্ট সিস্টেম এবং টাই ম্যাচের ফল নির্ধারণ
প্রতি পর্বেই বিজয়ী দল পাবে দুই পয়েন্ট, টাই এবং ফল না হওয়া পরিত্যক্ত ম্যাচের জন্য এক পয়েন্ট এবং হারের জন্য শূন্য পয়েন্ট। যদি দুই বা ততোধিক দল তাদের গ্রুপে সমান পয়েন্ট অর্জন করে, তাহলে নিম্নলিখিত দিকগুলো বিবেচনা করে দলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে:
জয়ের সংখ্যা
– নেট রান রেট
-হেড টু হেড ফলাফল (প্রথমে পয়েন্ট, তারপর সেই খেলায় নেট রান রেট)
– প্রথম পর্ব/সুপার টুয়েলভের মূল অবস্থান
ডিআরএস থাকবে কি না?
এবারই প্রথম আইসিসি পুরুষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আম্পায়ার ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম থাকবে। প্রতিটি দল ইনিংসে দুবার করে রিভিউ আবেদন করতে পারবে। মহামারির পর থেকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য এই নিয়ম করা হয়েছে। এর আগে প্রতি ইনিংসে ছিল একটি করে রিভিউ।
ম্যাচ টাই হলে কী হবে?
ম্যাচ টাই হলে দলগুলো সুপার ওভার খেলবে। যদি সুপার ম্যাচেও টাই হয় তাহলে যেকোনো একদল জেতা পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকবে। আবহাওয়া পরিস্থিতি এবং সময় সীমাবদ্ধতার কারণে সুপার ওভারও সম্ভব না হলে ম্যাচ টাই ঘোষণা করা হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি দলকে এক পয়েন্ট করে দেওয়া হবে।
যদি সেমিফাইনালের সময় কোনো ফলাফল অর্জন করা না যায় (অথবা ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়), তাহলে যে দলটি সুপার টুয়েলভ রাউন্ডে ওপরে থাকবে সে ফাইনালে উন্নীত হবে। ফাইনালে একই ধরনের ঘটনা ঘটলে উভয় দলকে যৌথ বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
খারাপ আবহাওয়ার জন্য কি রিজার্ভ ডে আছে?
গ্রুপ পর্যায়ের খেলার জন্য কোনো রিজার্ভ ডে নেই। শুধু সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে রয়েছে। ম্যাচ কর্মকর্তারা নির্ধারিত দিনে খেলা শেষ করার চেষ্টা করবেন। যদি তা না হয়, তাহলে রিজার্ড ডে’তে খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
বৃষ্টি বা অন্য কোনো কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে গেলে, গ্রুপ পর্বে ফলাফল নির্ধারণের জন্য প্রতিটি ইনিংসে ন্যূনতম পাঁচ ওভার বল করতে হবে। সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের জন্য সর্বনিম্ন দশ ওভার।
বিজয়ীদের জন্য পুরস্কার
বিশ্বকাপের এবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য থাকছে ১৬ লাখ ডলার প্রাইজমানি। রানার্সআপ দল পাবে এর অর্ধেক, ৮ লাখ ডলার। সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়া দুই দলের জন্য থাকছে ৪ লাখ ডলার করে।
দর্শকদের মাঠে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে?
অল্পসংখ্যক দর্শককে মাঠে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ওমানের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে ৩ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন অস্থায়ী গ্যালারি নির্মাণ করা হয়েছে। ওমানে প্রবেশকারী এবং যারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখতে চায় তাদের সবাইকে টিকা দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে দেশটির সরকার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সব ভেন্যু সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার প্রায় ৭০ ভাগ দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আবুধাবি স্টেডিয়ামে প্রবেশের জন্য দুই ডোজ টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। দুবাই ও শারজায় এর প্রয়োজন নেই। সব ভেন্যুতেই দর্শকদের মাস্ক পরতে হবে।