
করোনাভাইরাসের মহামারি বেশিরভাগ দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমিয়ে দিয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর কখনও প্রত্যাশিত আয়ু এক ধাক্কায় এতোটা কমেনি। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
গবেষণায় বলা হয়, মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে কয়েক বছরে যে অগ্রগতি হয়েছিলো তা মুছে দিয়েছে করোনা মহামারি।
গবেষকরা বলেন, প্রায় সাড়ে ৫ বছর ধরে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু এক বছর বেশি অর্জন করা সম্ভব হয়েছিলো। কিন্তু করোনার কারণে এই উন্নতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, চিলিসহ ২৯টি দেশের তথ্য নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে, যে ২৯টি দেশের তথ্য নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে তার মধ্যে ২৭টি দেশেই প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমেছে।
এরমধ্যে ২২টি দেশে ২০২০ সালে প্রত্যাশিত গড় আয়ু ২০১৯ সালের তুলনায় কমে গেছে ছয় মাসের বেশি।
২০১৫ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ১৫টি দেশে পুরুষদের এবং ১১টি দেশে নারীদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু প্রায় এক বছর কমে গেছে।
প্রত্যাশিত গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি কমতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুরুষদের। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমে গেছে দুই বছরের বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ৬০ বছরের কম বয়সীদের। অপরদিকে ইউরোপে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি বেড়েছে।
অক্সফোর্ডের লিভারহালম সেন্টার ফর ডেমোগ্রাফ্রিক সাইন্সের (এসিডিএস) গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া সহ-প্রধান জোস ম্যানুয়েল আবুর্তো বলেন, পশ্চিম ইউরোপীয় দেশ, যেমন-স্পেন, ইংল্যান্ড, ওয়েলস, ইতালি, বেলজিয়াম এবং অন্যান্য দেশগুলোতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমে গিয়েছিলো। এরপর করোনায় এই হার সবচেয়ে বেশি কমেছে।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এপিডেমিওলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রের সহ-প্রধান লেখক ঋধি কশ্যপ বলেন, আমাদের গবেষণার এই ফলাফলগুলিই স্পষ্ট করে, যেসব দেশে কোভিড-১৯ হানা দিয়েছে সেসব দেশ কতোটা বিধ্বস্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে পরবর্তী গবেষণার জন্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে আরও তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ঋধি কশ্যপ।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বব্যাপী মহামারির প্রভাবগুলিকে আরও ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করছি। যে কারণে মাঠ পর্যায়ের আরও তথ্য প্রয়োজন।