বেত্রাবতী ডেস্ক।।ঘটনা ২০১৫ সালের। রাজধানীর গাবতলী থেকে চট্টগ্রাম থেকে আসা একটি বাসের ট্রাংক থেকে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
ছয় বছর পর সেই লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রেজাউল করিম স্বপন নামের একজন কে কুমিল্লার ইপিজেড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই-এর মহাপরিচালক বনজ কুমার মজুমদার শনিবার ২৫ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পিবিআইকে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অজ্ঞাত নামা তরুণীর পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই।
তদন্তকারী কর্মকর্তা শম্পার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং জানতে পারে, ২০১৩ সালে রেজাউল করিম স্বপন (বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া নৌবাহিনীর সদস্য) খুলনা তিতুমীর নৌ ঘাঁটিতে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় শম্পা বেগমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক হয় দুজনের। পরে রেজাউল বদলি হয়ে চট্টগ্রাম চলে আসে। তার সঙ্গে বেরিয়ে যায় শম্পাও।
চট্টগ্রামে শম্পার এক ফুপুর বাসায় কিছুদিন থাকে দুজন। এরপর ফয়েজ লেক এলাকায় একটি হোটেলে কিছুদিন থাকে।
সেখান থেকে পাহাড়তলীর উত্তর গ্রিনভিউ আবাসিক এলাকার একটি বাসায় সাবলেট নিয়ে থাকতে শুরু করে।
২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মে পর্যন্ত একসঙ্গে ছিল তারা। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করলেও তখনও বিয়ে হয়নি তাদের।
পিবিআই-এর মহাপরিচালক বনজ কুমার মজুমদার আরও বলেন, পরে শম্পা ও রেজাউলের মধ্যে মনো মালিন্য দেখা দিলে আসামি রেজাউল করিম স্বপন ২০১৫ সালের ২ মার্চ রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে শম্পাকে।
লাশ গুম করতে সেটাকে ট্রাংকে ভরে ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনের একটি বাসে তুলে দেয় এবং ভিকটিমের বাবাকে জানায় শম্পাকে খুলনার বাসে তুলে দেওয়া হয়েছে।
পরে শম্পার খোঁজ না পাওয়ায় পাহাড়তলী থানায় জিডি করা হয়।
ভিকটিমের বাবা ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ আসামি রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের নৌবাহিনীর অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
২০১৯ সালে রেজাউল করিমকে বাধ্যতা মূলক অবসর দেওয়া হয় বাহিনী থেকে।
২০১৫ সালের ৩ মে বিকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম থেকে আসা ঈগল পরিবহনের একটি বাসের ট্রাংকের ভেতর থেকে অজ্ঞাতনামা তরুণীর লাশ পাওয়া যায়।
তখন লাশের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করা হয়।
ওই সময় পুলিশ বাদী হয়ে দারুস-সালাম থানায় একটি মামলা দায়ের করে।